একা আন্দোলন ।

একা আন্দোলন

১৯২১ সালের শেষ এবং ১৯২২ সালের শুরুর মধ্যবর্তী সময়ে উত্তরপ্রদেশে একটি শক্তিশালী কৃষক আন্দোলন হয়েছিল যা একা আন্দোলন নামে পরিচিত।

এই আন্দোলন মূলত বাঁরাবাকি, সিতাপুর,বারাইচ,হরদৈ এলাকায় তীব্র হয়ে উঠেছিল। একা কথাটি এসেছে কথাটি এসেছে একতা থেকে । কৃষকরা কিছু ধর্মীয় উৎসব যেমন জমিতে গর্ত খুঁড়ে তাতে গঙ্গা জল ঢেলে সমবেতভাবে একত্রিত হয়ে এই আন্দোলনের শপথ নিতো।

কারণ :এই আন্দোলন হয়েছিল মূলত উচ্চহারে রাজস্ব, নথিভুক্ত রাজস্বের ওপর অতিরিক্ত ৫০% বাড়তি আদায়, এবং রাজস্ব আদায় দুর্নীতি ও ঠিকাদারদের অমানুষিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে।

নেতৃত্ব :আন্দোলনের শুরুর দিকে কংগ্রেস ও খিলাফৎ নেতারা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও আন্দোলনের রাশ চলে গিয়েছিল মাদারি পাশি নামে এক চরমপন্থি নেতার হাতে।মাদারি পাশি ছাড়াও সারেব ও বাবা গরিব দাস প্রমুখ নেতারা ছিলেন।

প্রধান দাবী সমূহ :

১) নির্ধারিত কর ছাড়া অতিরিক্ত ৫০% কর কৃষকরা দেবেনা।

২) রশিদ বা প্রমাণপত্র ছাড়া কর নেওয়া চলবে না।

৩) বেট বেগারি বা বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করানো যাবে না।

৪) জমি থেকে উৎখাত করা চলবে না।

৫)পঞ্চায়েত ছাড়া অন্য কারও সিদ্ধান্ত কৃষকরা মানবে না।

৬) বাবা রামচন্দ্র কে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে।

৭)উৎপাদিত পণ্যের পরিবর্তে নগদ টাকায় খাজনা মেটানো হবে কারণ তখন কৃষি পণ্যের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছিল।

আন্দোলনের গতিপথ : প্রথমদিকে কান দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও ক্রমশ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। কুমায়ুন অঞ্চলে সংরক্ষিত অরণ্য জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। জমিদার তালুকদার দের ঘরবাড়ি আক্রমণ করা হয়। ঐতিহাসিক জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে এই আন্দোলনকে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ বলেছেন।আশরাফ সিদ্দিকীর মতে এই আন্দোলন ‘সামাজিক দস্যুতার’ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল।

ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্র দেখিয়েছেন কংগ্রেস এবং মহাত্মা গান্ধী আন্দোলনকারীদের হিংসা ত্যাগ করতে পরামর্শ দেন। কারণ কৃষকরা হিংসার পথ বেছে নিলে সরকার সহজেই তাদের আন্দোলন দমন করতে পারবে এবং কার্যত তাই হয়েছিল।

922 খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের মধ্যে সরকার চরম দমন নীতি প্রয়োগ করে আন্দোলন স্তব্ধ করে দেয়। মাদারি পাশি কারারুদ্ধ হন। এইভাবে একা আন্দোলন শেষ হয়ে গিয়েছিল।

Last updated