রাম্পা বিদ্রোহ।।

রাম্পা বিদ্রোহ।।

অন্ধ্রপ্রদেশের গুদেম পাহাড়ি এলাকায় মূলত এবং রেডমি উপজাতিদের দ্বারা একটি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল যা রাম্পা বিদ্রোহ নামে খ্যাত।এই বিদ্রোহ বা ‘ফিতুরি'র নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আল্লুরি সীতারাম রাজু।

গোদাবরী উপত্যকায় সংঘটিত এই রাম্পা বিদ্রোহের একাধিক কারণ ছিল –

১) স্থানীয় জমিদার এবং মহাজনদের চিরাচরিত শোষণ।

২)বিভিন্ন ধরনের অরণ্য আইন আদিবাসীদের ঝুম চাষ করার অধিকার, ঐতিহ্যগত পশুচারণ করার অধিকার কেড়ে নিয়েছিল।

৩)এছাড়া বলপূর্বক বেগার খাটিয়ে জঙ্গলের মধ্যে রাস্তা তৈরির চেষ্টা করত।

এমত অবস্থায় অন্ধ্রপ্রদেশের গুডেম পাহাড়ি এলাকায় আল্লুরি সীতারাম রাজু গান্ধীজীর ভাবাদর্শ উদ্বুদ্ধ হয়ে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে গান্ধীবাদী সংযম এবং খাদির কথা প্রচার শুরু করেন। যদিও তিনি বিশ্বাস করতেন ভারতবর্ষকে একমাত্র বল প্রয়োগ করেই মুক্ত করা যাবে।

‘ফিতুড়ি’র ঐতিহ্যের ওপর নির্ভর করে সীতারাম রাজু ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে অতর্কিতে আক্রমণ শুরু করেন।

আল্লুরি সীতারাম রাজু নিজে জ্যোতিষ বিদ্যা এবং হাতুড়ে চিকিৎসা বিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন বন্যপ্রাণীদের পোষ মানাতে দক্ষ ছিলেন। তিনি খুব দ্রুত গুডেম পাহাড়ি এলাকার আদিবাসীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

আল্লুরি রাজু নিজেকে কল্কি অবতার বলে ঘোষণা করে দেন। প্রচার করেন যে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র তার বা তার অনুগামীদের কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। দ্রুত তার আন্দোলন ভদ্রাচরম থেকে পার্বতীপুরম পর্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। আল্লুরি রাজু হিংসাত্মক পথে গেরিলা পদ্ধতিতে ইংরেজ বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে তুলেছিলেন।

রাম্পা বিদ্রোহ কিন্তু অন্যান্য চার-পাঁচটা বিদ্রোহের মতো শান্তিপূর্ণ ছিল না এটি যথেষ্ট হিংসাত্মক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।

১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে আল্লুরি রাজু ধরা পড়েন এবং তিনি নাকি পালাতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মারা যান। তার মৃত্যুর পর রাম্পা বিদ্রোহ দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

রাম্পা বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে সরকারকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল। মাদ্রাজ সরকারকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়েছিল।

Last updated