কাঙাল হরিনাথ
Last updated
Last updated
কাঙাল হরিনাথ ছিলেন একাধারে ছিলেন একধারে সাহিত্যশিল্পী, সংবাদ-সাময়িকপত্র পরিচালক, শিক্ষাব্রতী, সমাজসংস্কারক, সাধক ও ধর্মবেত্তা।কাঙাল হরিনাথ বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি গ্রামে ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহন করেছিলেন।দারিদ্রের কারণে হরিনাথ পড়াশুনা বেশিদূর চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি।কিন্তু শিক্ষার প্রসারে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট। ১৮৫৫ খ্রিঃ হরিনাথ তার কয়েকজন বন্ধুর সাহায্যে কুমারখালি গ্রামে দেশীয় বিদ্যালয় স্থাপন করেন,পরে তিনি গ্রামে মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি প্রায় ১৮টি বই লিখেছিলেন মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘বিজয় বসন্ত’, ‘কবিতা কৌমুদী’।কাঙাল হরিনাথ ছিলেন লালন ফকিরের অনুগামী।তিনি ‘কাঙাল ফকির চাঁদের দল’ নামে একটি বাউল দল তৈরি করেন।‘কাঙাল ফকিরচাঁদ ফকিরের জীবনী’ নামে একটি বাউল গানের সংকলন প্রকাশ করেন।হরিনাথের একটি বহুশ্রুত গান হল-
‘হরি দিন তো গেল সন্ধ্যা হল, পার করো আমারে…’
তিনি সাংবাদিক-জীবন শুরু করেছিলেন ঈশ্বরগুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায়। ১৮৬৩ খ্রিঃ তিনি নিজের পত্রিকা গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা প্রকাশ করেন।মূলত গ্রাম এবং গ্রামবাসীদের অবস্থা প্রকাশের জন্য এর নাম হয় গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা।তবে মূল লক্ষ্য ছিল কৃষকদের ওপর নীলকর সাহেব ও জমিদারদের অত্যাচারের কাহিনী প্রকাশ করা।তবে এই পত্রিকায় দর্শন, সাহিত্য ও অন্য সংবাদ প্রকাশিত হতো।লালন ফকিরের গান প্রকাশ করেছিল গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা।
মূলত গ্রাম এবং গ্রামবাসীদের অবস্থা প্রকাশের জন্য এর নাম হয় গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা।তবে মূল লক্ষ্য ছিল কৃষকদের ওপর নীলকর সাহেব ও জমিদারদের অত্যাচারের কাহিনী প্রকাশ করা।তবে এই পত্রিকায় দর্শন, সাহিত্য ও অন্য সংবাদ প্রকাশিত হতো।লালন ফকিরের গান প্রকাশ করেছিল গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা। প্রখ্যাত লেখক মীর মুশারফ হোসেন,জলধর সেন তাঁদের লেখক জীবনের সূত্রপাত করেছিলেন গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকায়।এছাড়া শিবচন্দ্র বিদ্যার্ণব,অক্ষয় কুমার মৈত্র, প্রসন্নকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ব্যক্তি এই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
হরিনাথ ছিলেন আপোষহীন।তিনি ঠাকুর পরিবারের কৃষক-প্রজা বিরোধী আচরণের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন।এজন্য একাধিকবার তাঁকে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে।কথিত আছে ঠাকুর পরিবারের লাঠিয়াল বাহিনী কাঙাল হরিনাথকে আক্রমণ করলে লালন ফকিরের দলবল তাকে রক্ষা করেছিল।অক্ষয়কুমার মৈত্র বলেছিলেন -‘হরিনাথ যাঁহাকে লক্ষ্য করিয়া সুতীব্র সমালোচনায় পল্লী-চিত্র বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন । তিনি এদেশের সাহিত্য-সংসারে এবং ধর্ম্মজগতের চিরপরিচিত-তাহার নামোল্লেখ করিতে হৃদয় ব্যথিত হয়, লেখনী অবসন্ন হইয়া পড়ে।’